সাহিত্য

অনিল সেন-এর আমি ও ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি

ঢাকা হাব ডেস্ক

আমি

লক্ষকোটি বছর আগে
আমি যেখানে ছিলাম
ঠিক সেখানে আছি‌
লক্ষকোটি বছর পর
আমি যেখানে যাবো
ঠিক সেখানেই আছি
আমি ঠুঁটো জগন্নাথ।

ফলহীন কর্মযজ্ঞ আমি
কর্ম আমার স্বভাবে নেই
আমি দেবশিল্পী।

আমার কাছে সময় বলতে কিছু নেই
আমি গতিহীন আলোকময়
আমাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে না কেউ-ই

আমি নিগূঢ়।
আমার কোনো অতীত নেই
আমি স্পর্শহীন বর্তমান
ভবিষ্যৎ আমার দিকে তাকিয়ে রয়

আমি কাল ভক্ষক।
আমার ইচ্ছাধীন এ জগৎ
আমার তাকানোয় জ্বলে

ওঠে আলো।
আমার ভাবনায় রঙিন
হয় সৃষ্টি
সুন্দর হয়ে ওঠে গোলাপ।

আমার মলিনতায়
আলো নিভে যায়
নিকষ আঁধার নেমে আসে
এ তত্ত্বকথা নয়, এ কাব্যকথা
এ সত্য, কবির বাণী।।

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি
পূজার নৈবদ্যে
নামাজের সিজদায়
আমি দেখেছি
গীর্জায় প্রার্থনা সংগীতে
কঠিন চিবর দান উৎসবে
সৃষ্টির কষ্টে।

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি
নবজাতকের চাহনিতে
সন্তান হারা মায়ের বুকফাটা কান্নায়
আমি দেখেছি
শতায়ু মানবের মৃত্যুর যন্ত্রণায়
অভাবে ক্ষয়ে যাওয়া স্বভাবে
অসহনীয় যাতনায়।

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি
সদ্য বীজ হতে গজানো দুটি পাতায়
প্রিয়া বিরহে ব্যাথাতুর প্রাণে
আমি দেখেছি
আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতে
ভূমিকম্পে মিশে যাওয়া জনপদে
সৃষ্টির অবজ্ঞায়।

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি
কালবৈশাখীর তান্ডবলীলায়
বয়ে যাওয়া প্রমত্ত ঘূর্ণিঝড়ে
আমি দেখেছি
পৃথিবীর সকল হাসি কান্নায়
শিশু যৌন নিপীড়নে
মনুষ্যত্বহীনতায়।

ঈশ্বরের কান্না আমি দেখেছি
রবীঠাকুরের নিমগ্ন চোখে
নজরুলের বিদ্রোহী চেতনায়
আমি দেখেছি
আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের অনুরণে
সূর্যোদয়ে প্রথম আলোতে
সৃষ্টির প্রথম সৃষ্টিতে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button