
নবিজী ( স:) বলেছেন, তোমরা যখন আজান শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলো। মুয়াজ্জিনের সঙ্গে আজানের শব্দগুলো বলাও জিকির। কারণ আজানের মাধ্যমে যেমন আল্লাহকে ডাকা হয় আবার এ জিকিরের ধারাবাহিকতায় মানুষ বুঝতে পারে যে, মুয়াজ্জিন নামাজের জন্য আহ্বান করছে।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কয়েকটি হাদিস। কেন তিনি আজানের অনুরূপ জিকির করতে বলেছেন-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন-
‘তোমরা যখন আজান শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলো; এরপর আমার জন্য দরূদ পড়ো; কারণ যে ব্যক্তি আমার জন্য একবার দরূদ পড়ে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য দশটি কল্যাণ নাজিল করেন। এরপর তোমরা আমার জন্য আল্লাহর কাছে ওসিলা চাও; ওসিলা হলো জান্নাতের ভেতরে এমন একটি স্থান; যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কেবল একজনই পাবে; আর আমার প্রত্যাশা- আমিই হবো সেই ব্যক্তি। যে ব্যক্তি আমার জন্য ওসিলা চায়; তার জন্য (আমার) সুপারিশ বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।’ (মুসলিম)
আজানের অনুরূপ জিকির ও এর বিনিময়
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজানের অনুরূপ জিকির ও তার বিনিময় সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুআনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’
তখন তোমাদের মধ্যে কেউ (যে শুনে সে) যদি বলে- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’;
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
সে যদি বলে- ‘আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’;
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’
সে যদি বলে- ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’;
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’
সে যদি বলে- ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’;
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’
সে যদি বলে- ‘লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’;
যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’
সে যদি বলে- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’;
এরপর যখন মুয়াজ্জিন বলে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
সে যদি বলে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
যদি সে মনের গহীন থেকে এসব বলে; তাহলে সে জান্নাতে যাবে।’ (মুসলিম)
জিকিরের পর ওসিলার দোয়া
আজানের পর যারা দরূদ পড়বে এবং অসিলার এ দোয়াটি পড়বে তবে তাদের জন্য নবিজীর সুপারিশ বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। হাদিসে এসেছে-
হজরত জাবির ইবনু আবদিল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আজান শুনে যে ব্যক্তি বলে-
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাতি ওয়াস-সালাতিল ক্বায়িমাহ; আতি মুহাম্মাদানিল ওয়াসিলাতা ওয়াল ফাদিলাহ; ওয়াবআছহু মাক্বামাম-মাহমুদানিল্লাজি ওয়া আ’দ-তাহ।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনিই এ পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত নামাজের মালিক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওসিলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দিন; যার অঙ্গীকার আপনি করেছেন।’
কেয়ামতের দিন আমার সুপারিশ তার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যায়।’ (বুখারি)