৭০ দশকের খ্যাতিমান কবি মাশুক চৌধুরী। চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে। রেখে গেছেন অসংখ্য কবিতা। সেসব কবিতা থেকে তুলে ধরলাম নদীর নাম দুঃসময় বইয়ের আমি সেই লাল গোলাপ ও আমার প্রেম কবিতা দুটি।
আমি সেই লাল গোলাপ
আমি সেই লাল গোলাপ
প্রজাপতির মতো রাঙা পাপড়ির পাখায়
বাতাসের সৌরভ মেখে
প্রতিদিন উদ্যান থেকে উড়ে গিয়ে
বসে থাকি তোমার খোপায়।
আমি সেই ঝরা বকুল
নিজের সৌরভে বিমোহিত প্রেমিক নার্সিয়াস,
রিদয়ে বেদনার ফুল ফোটাই প্রতিদিন
আর ঝরে পড়ে থাকি একা
তোমার চলার পথের শিশিরে।
লাল গোলাপের প্রজাপতি আমি
আমি ঝরা বকুলের প্রেম।
আমার প্রেম
শিশির বিন্দুর মতো
সবুজ প্রান্তরজুড়ে পড়ে থাকে
অনেক শব্দের কান্না।
পথের সরল রেখার বাকে
হারায় পায়ের চিন্হ
নির্জনতা পরে থাকে
শূন্যতায় দৃশ্যমান
ঝরা পাতার নিস্তব্ধ হাহাকার।
মানুষের চেতনার অন্দর মহলে
এবং নিরাকার অচৈতন্যের অস্তিত্বে
অগনিত নক্ষত্রের মতো
আলোকিত শব্দ ঝরে
উচ্চারিত এবং অনুচ্চারিত
সকল শব্দের অভ্যন্তরে জ্বলে
দৃশ্য-অদৃশ্য প্রদীপ।
সবুজ গাছের পাতা থেকে
সবুজ নৃত্যের শব্দ ঝরে
মায়াবী চাঁদের আলো থেকে
শব্দ ঝরে শিশিরের মতো-
নরম-কোমল ভেজা
আকাশের নীল ভেঙে ভেঙে
নীল নীল শব্দ ঝরে
বৃষ্টি থেকে অশ্রুর মতন
শ্বেত-শুভ্র ক্রন্দন কাতর-শব্দ ঝরে।
জীবন্ত মাছের মতো
কুল কুল শব্দ ভাসে
নদীর প্রবাহে
সমুদ্রের শব্দের তাণ্ডবে
আত্মবিনাশী ফেনার মতো
অন্ধক্রোধে ফুসে ফুসে ওঠে।
শুধু আমার অমর প্রেমই কথা বলেনা।
আরো পড়ুন… মাশুক চৌধুরীর ‘বাংলাদেশ’