ঢাকারাজনীতিসারা বাংলা

ইভিএম ভোট ডাকাতের বাক্স: তৈমূর

দল বহিষ্কার করলেও দল পরিবর্তন করব না, অন্য কোনো দলেও যোগ দেব না। দলের একজন অনুগত কর্মী হিসেবেই কাজ করে যাব। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের নিজ বাড়িতে প্রেস বিফ্রিংয়ে বহিষ্কৃত অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির যারা আমাকে নির্বাচন চলাকালে অব্যাহতি দিয়েছিল, এখন বহিষ্কার করেছে। এর অর্থ হলো তৈমূরকে ভোটটা দিও না। তারাই পল্টন অফিস থেকে আমার অনেক নেতাকে বলেছিল তৈমূরের পক্ষে যেও না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের বিএনপি তো ভোটটা দেবে, কাকে দেবে? তাদের কথায় প্রমাণ হয় ভোটটা নৌকায় যাবে, এটাই চেয়েছিল তারা। আমি ভাবতেও পারিনি দলীয় মহাসচিবের কথা কচু পাতার পানিতে পরিণত হবে। কারণ, মহাসচিব বলেছিলেন- দলগতভাবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, কিন্তু কেউ ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় নির্বাচনে গেলে দলের কোনো আপত্তি থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র থেকে বা দল থেকে তো আমাকে একবারের জন্যও বলেনি আপনি নির্বাচন করবেন না। তাহলে দলের যারা পল্টন অফিসে বসে নারায়ণগঞ্জের নেতাদের আমার নির্বাচনে যেতে নিষেধ করেছিল তারা অবশ্যই চেয়েছিল ভোটটা নৌকায় পড়ুক।

তৈমূর বলেন, দল আমাকে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে মুক্তি দিয়েছে, এখন আমার সামনে দুটি কাজই খুঁজে পেয়েছি। একটি হল যাকে আমি মায়ের মতো শ্রদ্ধা করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য এবং ভোট ডাকাতির মেশিন ইভিএমের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা।

আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করবো তিনি যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেন। ইতিহাসে আপনার নাম লেখা থাকবে। যদি অনুমতি না দেন, তবে কি বিপর্যয় হবে সেটা ভবিষ্যত বলে দেবে।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে তৈমূর বলেন, আমার ক্ষেত্রে যা করার করেছে কিন্তু এটিএম কামালের মতো নেতাকে বহিষ্কার করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের শামিল। কারণ, বিএনপি করতে গিয়ে ত্যাগী এটিএম কামাল বহুবার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। আরেকজন এটিএম কামাল সৃষ্টি করা নারায়ণগঞ্জে খুবই কঠিন হবে।

তিনি বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান থাকবে কেউ ইভিএম মেনে নেবেন না। এটা ভোট ডাকাতের বাক্স। আমাদের দেশের আমলাতন্ত্র মেরুদণ্ডহীন। ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক আমলের আদলে চলছে এখনও। তাদের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ ভূমিকা আশা করা যায় না। ইভিএমে নির্বাচনে গেলে কোনোভাবেই ভোট ডাকাতি রুখতে পারবে না জনগণ।

তৈমুর বলেন, আমি মনে করি রাজনীতি করতে গেলে একটা দল থাকতে হয়। কিন্তু পদ পদবি দরকার হয় না। ব্যক্তি ইমেজ ভালো থাকলে জনগণ এমনিতেই আপনার পাশে থাকবে। নির্বাচন কমিশন একটা মিথ্যার ফ্যাক্টরি, প্রশাসন একটা মিথ্যার ফ্যাক্টরি। জনগণ এখন মিথ্যার কষাঘাতে জর্জড়িত।

এই মিথ্যার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই হবে আমার কাজ। আমি জাতীয়তাবাদী ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমি না হয় বিএনপির কর্মী বা সমর্থক হয়ে থাকব। সমর্থককে তো আর বহিষ্কার করতে পারবে না। আমি বিএনপির সমৃদ্ধি কামনা করি, তারেক রহমানের বাংলাদেশে আগমন কামনা করি। তার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করি।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। একই দিন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকেও বহিষ্কার করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button