ধর্ম

ইসলামে নারীর মর্যাদা

শরীফ মুহাম্মদ আবদুল কাদির

শরীফ মুহাম্মদ আবদুল কাদিরের ইসলামে নারীর মর্যাদা একটি অসাধারণ বই । আশাকরি এই বইটি অনেকের, বিশেষ করে নারীদের ভালো লাগবে। লেখকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি তার অনুমতি নেওয়ার জন্য। পারিনি। তাই অনুমতি ছাড়াই পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম।

নারী পুরুষের চীরসঙ্গিনী। আল্লাহ্ তাআলা আদি মানব হযরত আদম (আ ) কে সৃষ্টি করিয়া বেহেশতে স্থান দিলেন। কত ফল–ফুল, কত মেওয়াজাত,কত নদী–ফোয়ারা, কত সবুজ–শ্যামল মাঠ ,কত দুধ-মধু আল্লাহ্  তাহাকে দিলেন, কে তাহার সংখ্যা করিবে? এত সব দেওয়ার পরেও আল্লাহ্ তা’আলা দেখিলেন, যাহা শান্তি লাভের প্রধান  অবলম্বন .আদম  এখনও তাহা পায়নি। সেই শান্তিরূপিনী শান্তিদায়িনীকে না পাইলে, এত যে দান বকশিশ, ইহা সকলই আদমের কাছে মিথ্যা।

তাই তিনি আদমের পাঁজর ছিঁড়িয়া আদমের পরম সুখের উপকরণ শান্তিমূর্তি বিবি হাওয়াকে বাহির করিলেন । আল্লাহ তা’আলা বিবি হাওয়াকে সৃষ্টি করিয়াই চুপ করিলেন না। স্নেহ–সম্ভাষণে বলিলেন, “আদম,তুমি তোমার স্ত্রি হাওয়াসহ এই বেহেশতে সুখ–শন্তিতে বসবাস করিতে থাক এবং তোমরা উভয়ই এই বাগানের ফল–মূল,পানীয় তৃপ্তিমত ভোগ করীতে থাক”। বিবি হাওয়াকে স্ত্রী রূপে পাইয়া আদম (আ) পূর্ণ শান্তি লাভ করিলেন।

কিয়ৎকাল পর হযরত হাওয়া বেহেশতে এক ভুল করিলেন । সঙ্গে সঙ্গে হযরত আদমও ভুল করিয়া নিষিদ্ধ ফল আস্বাদন করিলেন। আল্লাহর ইচ্ছা বুঝা কঠিন। যদি কেবলমাত্র হাওয়া ভুল করিয়া দুনিয়ায় নির্বাসন হইতেন, আর আদম (আ) বেহেশতেই থাকিয়া যাইতেন তবে বিচ্ছেদ – বেদনায় কাহার কি অবস্থা হইত কে জানে? হাওয়া ছাড়া আদম বেহেশতেও বিচ্ছেদের আজাব ভোগ করিতেন, আর হাওয়ার তো কথাই থাকিত না। ‘হাজার দোষের এক গুন’, উভয়ে মিলিয়া নির্বাসন গ্রহণ করিলেন। কিন্তু দুনিয়ায় আসিতে আসিতে আবার সাময়িক বিচ্ছেদ, আবার মিলন-আরাফার উৎপত্তি। যাহা হউক, মানব দুনিয়ার আদি হইতেই আমরা নারীকে পুরুষের সঙ্গিনীরুপে দেখতে পাই । এই বিশ্বোত্তর কালের সঙ্গিনীকে মানুষ কি মর্যাদা দেবে না ?

এই যে পৃথিবীতে আমরা বাস করি, ইহাও বেহেশতের প্রতিকৃতি। বেহেশতের নমুনা এখানে আছে। বেহেশতে বাগান আছে, এখানেও বাগান আছে ; বেহেশতে নহর আছে, এখানেও নদী-নালা আছে; বেহেশতে হুর আছে, এখানেও নারী আছে। মোটকথা, বড়লোক জেলে গিয়াও যেমন উত্তম খানা দানা, বই পুস্তক ইত্যাদির সুযোগ পাইয়া থাকে,নির্বাসিত মানুষ  আমরাও দুনিয়ায় বেহেশতের নমুনা–নেশান লাভ করিয়াছি।

মানুষ বেহেশতের চাইতে দুনিয়াকে কি কম মহব্বত করে? সকলেরই জানা আছে ঈমানের সহিত মরিতে পারিলে সে অভাবনীয় সুখ শান্তি বেহেশতে লাভ হইবে। তবুও কেহ এই দুনিয়া হইতে মরিতে চাহে কি? বাচাঁর জন্য– আরো দুইদিন দুনিয়ায় থাকার জন্য ডাক্তার–হাকিম, ওষুধ-পত্র কত কিছুর দিকেই না মানুষ ধাওয়া করে। তবে দেখা যায় এই দুনিয়া প্রাপ্তিও একটি মস্ত বড় সৌভাগ্য ।………….চলবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button