শিক্ষার্থীদের নতুন চার প্রস্তাবনা
উপাচার্যের বিষয়ে আচার্যকে অবহিত করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
প্রতিনিধি, সিলেট

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠকে উপাচার্যের বিষয়ে আচার্যকে অবহিত করা হবে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবির বিষয়টি আচার্যকে (রাষ্ট্রপতি) অবহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আচার্য যেহেতু একজন উপাচার্যকে নিয়োগ দেন কিংবা অপসারণ করেন, সেহেতু আমরা বিষয়টি আচার্যকে অবহিত করব।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে নতুন করে আরও চারটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। যেগুলো আন্দোলন শুরুর পর থেকে এসব দাবি এর আগে কখনো উপস্থাপন করেননি শিক্ষার্থীরা।
প্রস্তাবনা চারটি হলোঃ-
- অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার সহধর্মিণী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে শাবিপ্রবিতে এমিরেটাস অধ্যাপক করা।
- দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাখাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বাড়ানো এবং সঠিক ব্যয় নিশ্চিতকরণ।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম চালু করা।
- শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পিএইচডিসহ ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মতামত যাচাই করা।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বিকেল ৩টায় সিলেট সার্কিট হাউজে বৈঠকে বসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল। মন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন- মোহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর অর্ঘ, শাহরিয়ার আবেদিন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব।
এর আগে বৈঠকে যোগ দিতে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে প্লেনে করে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এসময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ১২টায় সিলেট সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়। প্রায় ১৯ মাস পর ওইদিন থেকে হলে ফিরতে শুরু করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ফেরার পর হলে তারা বিভিন্ন সংস্কার দেখতে পান। পাশাপাশি বেশকিছু নতুন নিয়মনীতি ও সমস্যার সম্মুখীন হন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
এরপর থেকে হলের এসব নিয়মনীতি, সিট বণ্টন, খাবার সমস্যা, ওয়াইফাই সমস্যা, পানির সমস্যা, বাইরের হোস্টেলের ভাড়া নিয়ে দিন দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হল প্রভোস্ট বডির দূরত্ব বাড়তে থাকে। এসব বিষয়ে অভিযোগ করে প্রভোস্ট বডির ‘অসদাচরণের’ শিকার হয়েছেন, অভিযোগ করে ছাত্রীরা।
এসব কারণে গত ১৩ জানুয়ারি থেকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে দায়ী করে তার পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এই সম্পর্কে আরও পড়ুন…
শাবির অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থীরা
ড. জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
`১০ হাজার টাকা দিলাম, আমাকে অ্যারেস্ট করুক’
শাবি শিক্ষককে ফেনসিডিল সাপ্লাই দিতে গিয়ে গার্ড আটক
অস্ত্রোপচারেও অনশন ভাঙেননি শাবির রাতুল