
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাসের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় আসছিলেন কুষ্টিয়ার নাজিমুল ইসলাম ও তানজিনা খাতুন। পদ্মা পার হতে রাত ১২টায় যখন তারা দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছান, তখন ফেরি বন্ধ। কমে আসছে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অক্সিজেন।
ঘাট কর্তৃপক্ষকে তারা ফেরি ছাড়ার অনুরোধ করেন। কুয়াশা থাকায় রাজি হননি তারা। অন্য উপায়েও চেষ্টা করেন নদী পারের। সেটিও সম্ভব হয়নি।
অ্যাম্বুলেন্সে বসে ফেরি ছাড়ার অপেক্ষা করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিলনা। আর অপেক্ষা সইছিলনা শিশুর। সকাল ৯টায় চলে যায় না ফেরার দেশে ।
দৌলতদিয়া ঘাটে এ চিত্র বুধবারের। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় বৃহস্পতিবার। স্থানীয়রা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কয়েকদিন ধরে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকছে ফেরি। এতে ঘাট এলাকায় শত শত যানবাহন আটকে ছিল।
তানজিনা খাতুন বলেন, ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে আমার কলিজার টুকরো শিশুটি মারা গেল। তারা ইচ্ছা করলে আমাদের নিয়ে ওপারে যেতে পারত। অনেক অনুরোধ করার পরও তারা ফেরি ছাড়েনি।
নাজিমুল ইসলাম বলেন, আমার শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সেখানে কয়েকদিনে সুস্থ না হওয়ায় তারা ঢাকা শিশু হাসপাতালে রেফার্ড করে। আমি অ্যাম্বুলেন্স করে রাত ১২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাটে আসার পর দেখি ফেরি বন্ধ। সারা রাত ৭নং ফেরিঘাটে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে বাচ্চা নিয়ে বসে থাকি। ভোরের দিকে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়।