বিনোদন

খল অভিনেতা খলিল উল্লাহ খান ও মিজানুর রহমান

খল অভিনেতা অভিনেত্রী একজন নায়ক বা নায়িকার মতই গুরুত্বপূর্ণ। ঢালিউডের  সূচনালগ্ন থেকে বাংলা সিনেমায় খলনায়কদের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হতো। বর্তমানে সিনেমাতে ভালমানের খল অভিনেতা অভিনেত্রি  কম দেখা যায়। তাদের কয়েক জনের কথা বলবো, যারা আজ শরীরে আমাদের মাঝে নেই, তবে বাস করছেন  আমাদের মনের গভীরে।

খলিল

খলিল। খল অভিনেতা খলিলের প্রকৃত নাম খলিলউল্লাহ খান। ১৯৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে তার জন্ম। ছাত্র জীবন থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত তিনি। প্রথমে মঞ্চে কাজ করেন। ১৯৬০ সালে ‘প্রীত না জানে রীত’ ছবির মাধ্যমে নায়ক হিসেবে বড় পর্দায় আসেন তিনি। পরে ‘সোনার কাজল’ ছবিতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। ‘জংলী ফুল’ ছবি দিয়ে খলনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু তার। ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয়শ’ ছবিতে অভিনয় করেন। টিভি নাটকেও অভিনয় করেন।

খল অভিনেতার  ভূমিকায় অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে একাধিকবার জাতীয়, বাচসাসসহ বিভিন্ন সংগঠনের পুরস্কার পান। ২০১২ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর কর্মকর্তাও ছিলেন খলিল। খলিল ১৯৫৪ সালে মানিকগঞ্জের রাবেয়া খানমকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে। তিনি ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকায় মারা যান।

মিজু আহমেদ

মিজু আহমেদ। প্রকৃত নাম মিজানুর রহমান। জন্ম ১৯৫০ সালের ১৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায়। ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘তৃষ্ণা’ ছবির মাধ্যমে খল অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে আগমন তার। এরপর গাংচিল, মাসুম, জনতা এক্সপ্রেসসহ তিন শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন মিজু। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতিও নির্বাচিত হন মিজু আহমেদ।

আশির দশকে তিনি নাট্যধর্মী মহানগর , সঙ্গীত-নাট্যধর্মী নয়নের আলো, অপরাধ-নাট্যধর্মী সারেন্ডার, ও নাট্যধর্মী সত্য মিথ্যা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নব্বইয়ের দশকে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল অপরাধধর্মী দাঙ্গা, ত্রাস, ত্যাগ, দেশপ্রেমিক, খলনায়ক, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক হাঙর নদী গ্রেনেড, অপরাধধর্মী আম্মাজান ।

১৯৯২ সালে ত্রাস চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১০ সালে ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ খলচরিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ১৯৫৩ সালের ১৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কুষ্টিয়ার স্থানীয় একটি নাট্যদলের সাথে অন্তর্ভূক্ত হন। তিনি বিএসসি পাস ছিলেন।
১৯৭৮ সালে তৃষ্ণা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।কয়েক বছর পরে তিনি ঢালিউড চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যতম সেরা একজন খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। এছাড়াও তিনি তার নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস মুভিজ এর ব্যানারে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন। মিজু আহমেদ পারভীন আহমেদকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির তিন সন্তান। দুই মেয়ে তাসনিম আহমেদ ও আফিয়া আহমেদ এবং ছেলে হারসাত আহমেদ। তিনি ২৭ মার্চ ২০১৭ তারিখ ঢাকা থেকে ট্রেনে করে মানুষ কেন অমানুষ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে দিনাজপুর যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button