খুনিকে আশ্রয় দিয়ে আমেরিকা মানবাধিকারের ছবক দেয়-প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দণ্ডপ্রান্ত খুনিদের আশ্রয়দাতা আমেরিকার কাছ আমাদের আইনের শাসনের ছবক শুনতে হয়। মানবাধিকারে কথা শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। ন্যায়বিচারের কথা শুনতে হয়। সেটিই খুব অবাক লাগে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার যতজন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, আমি সরকারে আসার পর তাদের প্রত্যেককে অনুরোধ করেছি বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দিতে। আপনাদের জুডিশিয়ারি সিস্টেম কীভাবে আশ্রয় দেয়? কীভাবে আপনারা একজন খুনিকে আশ্রয় দেন? খুনি রাশেদ এখন আমেরিকায়। আর নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা। তারপরও তাদের কাছ থেকে ছবকও শুনতে হয়।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড জুডিসিয়ারি’ শীর্ষক বাংলা ও ইংরেজিতে মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং ‘ন্যায়কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষের স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা চাইতেন স্বাধীন বিচারব্যবস্থা। আমরা সরকারে এসে সেই স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ’৯৬ সালে তিনি প্রথম সরকার গঠন করেন। এরপরই রাষ্ট্রীয়ক্ষমতা সেনাছাউনি থেকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। বিচার বিভাগের অধিকারের জন্য কাজ করি। দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে দেশে সেই ইনডেমনিটি বা সেই বিচারহীনতার সংস্কৃতিই থেকে যেতো।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগে কখনো হস্তক্ষেপ করেনি।ফলস সার্টিফিকেটের ব্যবহার বা ছাত্রদলের কাঁধে হাত রেখে রায় দেওয়া।
প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা কাজ করে গেছি। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় এসে ‘দি কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৯’ পাশ করি। বিচার বিভাগ পৃথিকীকরণের কাজটি স্থায়ী রূপ দেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সবসময় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে। আমাদের দেশটাও যেমন বিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে চলবে, আমরা সেটাই করতে চাই। সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারকদের থাকার ব্যবস্থা, তাদের চলার ব্যবস্থা, সব ধরনের ব্যবস্থা, সুযোগ-সুবিধা আমরা আমাদের সাধ্যমতো করে দিয়েছি।
বিচারকদের দক্ষতা বাড়াতে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীবলেন, আমরা আইন কমিশন গঠন করি। বিচারকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আমি প্রতিষ্ঠা করে দেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ট্রেনিং নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেছি। তারা যাতে বিচার পায় সেজন্য লিগ্যাল এইড কমিটি করে দিয়েছি। বিচারের রায় বাংলায় লেখার ওপর গুরুত্ব দেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির শুরু হওয়ার কথাও বলেন তিনি।