
বাজারমূল্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে টিসিবির পণ্যবিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে তেল, চিনি, পেয়াজ ও মশুরের ডাল। তবে অধিকাংশ স্পটে প্রকৃত নিম্নআয়ের মানুষ এসব পণ্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
পণ্য কেনার জন্য বিভিন্ন স্পটে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ঘনিষ্ঠ পরিচয়েপণ্য কিনতে লাইনে ‘ভাড়াটে’ লোক দাঁড় করিয়ে পণ্য সংগ্রহ করছে একটি চক্র।
পরে এসব পণ্য বেশি দামে পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকায়, মসুর ডাল ৬০ টাকায়, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকায় এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একজন ক্রেতা সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি চিনি ও পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের সামনে উপস্থিত ক্রেতাদের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা নিউজ হাবের প্রতিবেদকের। অধিকাংশ ক্রেতার অভিযোগ, টিসিবির পণ্য কিনতে প্রতিদিন ঘুরেফিরে কিছুসংখ্যক পরিচিত মুখের দেখা মেলে। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তারা সকাল থেকেই বিভিন্ন স্পটের সামনে বসে থাকেন কিংবা রাস্তায় ইট বসিয়ে রেখে জায়গা দখল করে রাখেন। টিসিবি’র ট্রাক এলে তারাই প্রথমে পণ্য পান। আবার ঘুরেফিরে তাদের লোকজনদেরকেই একাধিকবার পণ্য সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
অভিযোগ রয়েছে, যারা একাধিকবার পণ্য কেনেন তাদের পক্ষ নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়দানকারী ঐ সব ওয়ার্ডেরকিছু উঠতি নেতাকর্মী।
সম্প্রতি রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানের সামনে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের সামনে কিছুসংখ্যক নারীকে হাতে টাকা নিয়ে পণ্য কেনার জন্য হইচই করতে দেখা যায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ ট্রাক দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, তিনি সপ্তাহে দুদিন টিসিবির পণ্য কিনতে আসেন। যখনই আসেন তখন কিছু পরিচিত নারী ও শিশুর মুখ দেখতে পান।
মোহাম্মদপপুরের বাসিন্দা গৃহবধূ মুক্তি জানান, তাদের এলাকায় টিসিবিরি আটা চাউলসহ অন্য পণ্য বিক্রয়কারীরা নির্দিষ্ট দোকানে কিছু বেশি দামে বস্তাবর্তি দিয়ে দেন। তারা ঐ সব পণ্য খুচরা মূল্যে বিক্রি করেন। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ বঞ্চিত হন প্রতিনিয়ত।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি সরকারের নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। মনিটরিং না থাকা এবং সংঘবদ্ধ একটি চক্র গড়ে ওঠায় প্রকৃতপক্ষেই যাদের টিসিবির পণ্য দরকার, তারা পাচ্ছেন না।