
তিন শিশু পাঁচ ভাইয়ের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করলেন । কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাটের হাসিনাপাড়ার গতকাল শুক্রবার প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র শীলের পাঁচ ছেলের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে এই দৃশ্য দেখে কেদেছেন উপস্থিত সকলে।
৮ ফেব্রুয়ারি বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা সারতে গিয়ে মহাসড়কে পিকআপের চাপায় পাঁচ ভাই নিহত হনশিশু অর্ক, আয়ুষ্মান, অভি ভোর থেকে উপোস। চুল কেটে সকাল ৯টায় তাদের গোসল করানো হয়। পরানো হয় ধুতি।
তিন শিশুকে পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদনে সহযোগিতা দেন সদ্য স্বামীহারা তাদের মায়েরা। মৃত্যুর শোককে পাথরচাপা দিয়ে সন্তানদের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পাদনে সহায়তা দিতে হয় তাদের। আনুষ্ঠানিকতা শেষে সন্ধ্যায় তিন শিশু আহার গ্রহণ করে।
।
গত ৩০ জানুয়ারি মারা যান সুরেশ চন্দ্র শীল। তার ছোট ভাই চিত্তরঞ্জন শীল জানান, তাঁর বড় ভাইয়ের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় ৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ির কাছে মহাসড়কের পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় পিকআপচাপায় একসঙ্গে নিহত হন তার পাঁচ ভাইপো অনুপম শীল, নিরূপম শীল, দীপক শীল, চম্পক শীল ও স্মরণ শীল। ওই সময় গুরুতর আহত হন আরেক ভাইপো রক্তিম শীল।
বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম জেনালের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর রক্তিমের দুই বোনের মধ্যে হীরা শীলের এক পা কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি স্থানীয় মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার ভয়াবহতা দেখে সহ্য করতে না পেরে রক্তিমের আরেক ভাই প্লাবন শীল ব্রেন স্ট্রোক করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরেক বোন মুন্নি শীল সুস্থ আছেন।
অর্থসংকটে থাকা নিহতদের মা মৃণালিনী শীল বলেন, একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের মৃত্যু, অপর সন্তানেরও প্রাণ যায় যায় অবস্থায়। আরেক সন্তান ব্রেন স্ট্রোক করল, মেয়ে হীরার পা কেটে ফেলায় পঙ্গু হলে গেল। আমার পরিবারে আয় করার মতো আর কেউ থাকল না। এই অবস্থায় সংসার চালানো যেখানে কঠিন, সেখাকে তাদের চিকিৎসা ব্যয় মিটবে কিভাবে তা ভাবতে পারছি না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রতি সুদৃষ্টি দেবেন, সেই আশায় আছি।