
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে কারা তার রিপোর্ট এখনও পাইনি। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়া। এটা শুধু বিদ্রোহ ছিল না, এর পেছনে সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র ছিল।
আজ শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহে নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতির জন্য অত্যন্ত শোকাবহ দিন। একইসঙ্গে একটা আতঙ্কের দিনও, এই জন্য যে এই বিদ্রোহ, দুর্ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের জাতির সম্পদ সেনাবাহিনীর ৫৬ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের জাতীয় যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেটাকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ঘটনার এত বছর পরেও তদন্ত করে প্রকৃত যে সত্য সেটা উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধেও এত কর্মকর্তা মারা যাননি। এখানে ৫৬ জন কর্মকর্তা মারা একজন সৈনিক গেছেন।
তিনি বলেন, বিডিআর একটা ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ছিল সীমান্ত রক্ষার। সেটাকে ভেঙে দিয়ে নতুন করে একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে। হাজার বিডিআর সৈনিকদের বিচার করা হয়েছে, পেছনে কারা তার সুষ্ঠু তদন্তের রিপোর্ট আমরা এখনও পায়নি। সেনাবাহিনীর যে তদন্ত করা হয়েছিল, তারও রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, পিলখানা ট্র্যাজেডির ১৩ বছর আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম দিনের ১৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৩ বছর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারান ৫৭ সেনা সদস্যসহ মোট ৭৪ জন।
বহুল আলোচিত পিলখানা ট্র্যাজেডির দায়ের করা মামলায় ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। দীর্ঘ বিচার ও রায় শেষে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি পিলখানা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
সেদিন সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিজিবির বার্ষিক দরবার চলাকালে হলে ঢুকে পড়ে একদল বিদ্রোহী সৈনিক। এদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনা। বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।