Sub Lead Newsধর্মনারী ও শিশু

ফাতিমা রা. জান্নাতি নারীদের সরদার

ধর্ম ডেস্ক

ফাতিমা রা. জান্নাতি নারীদের সরদার। প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ সো) বলেছেন, ফাতেমাতু বাদয়াতু মিন্নি’ ফাতেমা আমারই অংশ। তিনি ছিলেন শেরে খোদা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর ‘স্ত্রী’, জান্নাতের যুবকদের নেতা হজরত ইমাম হাসান ও হোসাইন রাদিআল্লাহু আনহুমার ‘মা’।

ফাতিমা জাহরা (রা.) ছিলেন রাসুলের সর্বাধিক স্নেহের ও আদরের দুলালি। হযরত মোহাম্মদ সো) এরচার মেয়ের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হলেন হজরত ফাতিমা জাহরা (রা.)।

তিনি হযরত মোহাম্মদ সো) নবুওত প্রাপ্তির পাঁচ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত মোহাম্মদ সো) এর বয়স তখন ৩৫ বছর। অন্য বর্ণনায় নবুওতপ্রাপ্তির এক বছর পর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তখন নবীজির বয়স ছিল ৪১ বছর। যখনই হযরত মোহাম্মদ সো) এর কাছে যেতেন তিনি তাকে মাথায় চুমো দিতেন। পাশে বসাতেন

মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রা.) থেকে বর্ণিত হযরত মোহাম্মদ সো) বলেন, ফাতিমা (রা.) আমার অংশ। যে তাকে রাগান্বিত করল, সে আমাকে রাগান্বিত করল।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৭১৪)

ইসলামের সূচনালগ্নে মক্কার কাফের-মুশরিকদের অমানবিক নির্যাতনের দিনগুলোতে তিনি হযরত মোহাম্মদ সো) এর পাশে ছিলেন। আল্লাহর রাসুলের কষ্ট দূর করার চেষ্টা করতেন।

একবার নামাজরত অবস্থায় আবু জেহেল মহানবীর কাঁধে কিছু নাড়িভূঁড়ি রেখে দিয়েছিল। ফাতিমা সেটা দেখে তা সরানোর জন্য দৌঁড়ে গেলেন। বাবার কষ্টে তিনি কাঁদতে শুরু করেন।

দ্বিতীয় হিজরিতে বদর যুদ্ধের পর আলী (রা.)-এর সঙ্গে ফাতিমা রা.-এর বিয়ে হয়। তাদের বিয়ের সময় যে মোহর নির্ধারণ করা হয়েছিলো তাকে ইসলামের ইতিহাসে মোহরে ফাতেমি বলা হয়। অনেক মুসলিম পরিবারে মেয়েদের বিয়ের সময় এই মোহরানা ধার্য করার প্রচলন রয়েছে।

ফাতিমা রা.কে নবী বংশের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়। তার দুই ছেলে হাসান ও হুসাইন রা. থেকে নবীজির বংশধারা চলমান।

হাদিসের ভাষায় ফাতিমা রা. জান্নাতি নারীদের সরদার। নবী (সা.) বলেন, ফাতিমা জান্নাতের নারীদের সরদার এবং হাসান-হোসাইন জান্নাতের যুবকদের সরদার।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৮১) তিনি মোট ১৮টি হাদিস বর্ণনা করেন।

এছাড়াও হযরত মোহাম্মদ সো) তাকে পৃথিবীর সকল নারীদের শ্রেষ্ঠ গণ্য করেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেন, জগতের সব নারী থেকে চারজন নারী অনুকরণের জন্য যথেষ্ট- মরিয়ম বিনতে ইমরান, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ, ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৭৮)

হিজরতের আগে ছোট বয়সেই মা খাদিজা রা. কে হারান ফাতিমা রা.। জীবদ্দশাতেই বোন রুকাইয়্যা, উম্মে কুলসুম তারপর জয়নবকে হারান। এরপর জীবদ্দশাতেই তিনি বাবা হযরত মোহাম্মদ সো) কে হারান।

হযরত মোহাম্মদ সো) কে দাফন করে এলে ফাতিমা (রা.) সাহাবি আনাসকে (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, কীভাবে তোমাদের জন্য সম্ভব হলো- আল্লাহর রাসুলের ওপর মাটি চাপা দিতে!’ (বুখারি, হাদিস : ৪৪৬২)

হযরত মোহাম্মদ সো) এর ওফাতের পর তিনি মাত্র ৬ মাস বেঁচে ছিলেন। পিতৃবিয়োগে এতই কাতর হয়ে পড়েন যে, ৬ মাস তাকে হাসতে দেখা যায়নি। হজরত ফাতিমা তিন রমজান ইন্তেকাল করেন।  ১১ হিজরিরচাচা আকিলের বাড়ির এক কোণে তাকে দাফন করা হয়। (আস-সাহাবিয়াত: ১৫৩)

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button