Exclusive 1জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা মতেই চলবে বাংলাদেশ-প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে যে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন সে মতেই চলবে বাংলাদেশ। আর দেশের এ অগ্রযাত্রা যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছেন তারা শাস্তি পেয়েছেন। দেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছে। আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি বলেই আমরা আজ ১৩ বছর পূর্ণ করতে পেরেছি। পর পর তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হলে সেটা সম্ভব ছিল না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এ বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে (পাকিস্তানের কারাগার থেকে) একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে চলবে সেই নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দিয়েছিলেন। যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ চলবে, যে আদর্শ তিনি ব্যক্ত করেছিলেন। আর সেই আদর্শ নিয়েই আমাদের চলতে হবে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশের এ অগ্রযাত্রা যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এদেশের উন্নয়নের চাকাটা গতিশীল থাকবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খুনি, যুদ্ধাপরাধী, দুর্নীতিবাজদের কোনো স্থান বাংলার মাটিতে হবে না। এ কথাটটা তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিতে হবে। জনগণের অধিকার নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।

জাতির জনক দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভানোবাসতে শিখিয়ে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে তিনি বলেছিলেন এ দেশের মানুষ অন্ন পাবে, বস্ত্র পাবে, তারা উন্নত জীবনের অধিকারী হবে—সেটাই আমাদের আদর্শ।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সবাইকে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আজ দুর্নীতি খোঁজেন তাদের বলবো, ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, কেননা দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকা বানিয়ে তারা বিদেশে পাচার করেছে, বাংলাদেশকে ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে, জঙ্গিবাদ ও বাংলাভাই সৃষ্টি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে থাকাটা একশ্রেণির মানুষের অভ্যাস। কারণ যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি এবং খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। যারা দেশের উন্নয়ন সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের কিছু প্রেতাত্মা এখনো সমাজে আছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে এবং তারাই এগুলো করে বেড়াচ্ছে। বিদেশের কাছে নালিশ করে বেড়াচ্ছে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, আজ বাংলাদেশের কোথায় কমতি আছে, যারা আজ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর বলেন, উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ধ্বংস হয়েছে, তাদের বলি যদি ধ্বংসই হয়ে থাকে তাহলে আজকে যে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছে, ব্যাপকভাবে রাস্তাঘাট হয়েছে, স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে— এটা কীভাবে সম্ভব হলো।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে যেখানে অনেক উন্নত দেশও পারেনি সেখানে তার সরকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি বিনা পয়সায় টিকা দিচ্ছে। প্রবৃদ্ধি যেটা ৮ শতাংশের ওপরে উঠেছিল করোনার মধ্যেও তা ৫ দশমিক ৪ শতাংশে রাখতে পেরেছেন, মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, বিএনপি আমলে ছিল ৬৪ হাজার কোটি টাকার বাজেট, সেখান থেকে তার সরকার ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে বাজেট দিতে সক্ষম হয়েছে। অথনৈতিক উন্নতি না হলে যা সম্ভব ছিল না। যদি অর্থ ব্যয়ই না হবে তাহলে এত কাজ হয় কীভাবে। কাজেই এগুলো যারা দেখেন না তাদের চোখে ঠুলি পড়ানো। খুনিদের ঠুলি, যুদ্ধাপরাধীদের ঠুলি। তারা দেশের উন্নয়ন দেখেন না, আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলে প্রশংসা করলেও সেটা তাদের নজরে আসে না। কারণ লুটে খেতে পারছে না, সেটাই তাদের বড় কথা। তাদের লক্ষ্য দেশের হাড্ডি, কঙ্কালসার মানুষ দেখিয়ে বিদেশ থেকে টাকা এনে শুধু লুটপাট করে খাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি আর সেই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আমাদের বিরুদ্ধে বদনাম করে বেড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button