Exclusive 1জাতীয়

বিয়েসহ পারিবারিক অনুষ্ঠানে আপাতত বাধা নেই

বিয়ে, পিকনিক, রেস্তোরাঁ বা কমিউনিটি সেন্টারে পারিবারিক অনুষ্ঠানে আপাতত কোনো বাধা নেই। করোনা রোধে সারা দেশে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি হলেও ঘরোয়া ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান ও পর্যটন কেন্দ্র চালু থাকবে। খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চলবে বাণিজ্য মেলা।

দেশে প্রচুর টিকা মজুত থাকলেও প্রত্যাশিত মাত্রায় তা দেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে সোমবার ঘোষিত বিধিনিষেধে বড় কোনো নিয়ম দেওয়া হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তারপরও সোমবার বিধিনিষেধ জারির পর থেকে পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার থেকে বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন পূর্বনির্ধারিত সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজকরা। বিশেষ করে শুক্রবার বেশকিছু বিয়ের অনুষ্ঠান আছে। অনেক আগে থেকেই এগুলোর আয়োজন চলছে। কার্ড ছাপানো, হোটেল বা কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া, অথবা বাড়ির আঙ্গিনায় প্যান্ডেল করে বিয়ে বা আকদের আয়োজন চলছে।

এ অবস্থায় হঠাৎ বিধিনিষেধ দেওয়ায় চোখে অন্ধকার দেখছেন বর-কনের বাবা-মা ও অভিভাবকরা। তারা অনুষ্ঠান করতে পারবেন কিনা তা জানার জন্য বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করছেন। কোথাও স্পষ্ট কোনো উত্তর বা ধারণা পাচ্ছেন না।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান মঙ্গলবার রাতে বলেন, বিয়ে বা আকদের মতো ঘরোয়া অনুষ্ঠান প্রতিপালনে আপাতত কোনো সমস্যা নেই। এসব অনুষ্ঠানে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি আদেশে খোলা জায়গায় সামাজিক-রাজনৈতিক সব ধরনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থেকে বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়, কোভিড আক্রান্তের হার বাড়ছে। ফলে খোলা জায়গায় সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সমাবেশ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

একই সঙ্গে দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় টিকা সনদ দেখানোর বাধ্য-বাধকতা দেওয়া হলেও মাঠপর্যায়ে এখনি সেটা কড়াকড়িভাবে পালন না করতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।

তবে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে যাতে কোনো ঢিলেমি না থাকে তা কড়াভাবে প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে। বিধিনিষেধ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত উচ্চপর্যায়ের এবং মাঠ প্রশাসনের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

চলমান বাণিজ্যমেলা স্থগিত করেনি সরকার। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলার প্রস্তুতি চলছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বন্ধের ঘোষণাও আসেনি। ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন ও টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি।

ঢাকায় ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত আছে ১৮-২০ জানুয়ারি। সম্মেলনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এখনো পর্যন্ত সম্মেলন স্থগিতের কোনো ইঙ্গিত নেই। ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারিত আছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত এসব অনুষ্ঠান স্থগিত বা বাতিলের কোনো ঘোষণা আসেনি।

তবে বিধিনিষেধ জারির পরপরই বেসরকারি পর্যায় থেকে কয়েকটি অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের শতবর্ষে মিলনমেলা সাময়িকভাবে স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি একে আজাদ ও মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য শতবর্ষের মিলনমেলা অনুষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

রাজধানীকেন্দ্রিক সাংবাদিকদের অন্যতম বৃহৎ সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বার্ষিক ফ্যামিলি ডে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।

বাণিজ্যমেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবমো. হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিধিনিষেধের আলোকে আমরা দেখেছি, নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্যমেলার কার্যক্রম চালাতে কোনো বাধা নেই। মেলা বন্ধ করার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button