
সাইনবোর্ডে ভাংড়ি ব্যবসায়ী। ভাংড়ি ব্যবসায়ী সাইনবোর্ডের আড়ালে দেদারছে চলছে চোরাই লোহা ব্যবসা । এমনই প্রমাণ মিলেছে ঈশ্বরদীর বহরপুরে অবস্থিত পাবনা জেলার সবচে বড় ভাংড়ি ব্যবসায়ী মেসার্স মনিরুল আয়রন স্টোর এর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে একটি চোরাই মোটর সাইকেলসহ এক জনকে আটক করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
গত ১ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের খোয়া যাওয়া ফিস প্লেট এবং একটি মোটর সাইকেল মনিরুল আয়রনের গোডাউন থেকে উদ্ধারের পর চোরাই মাল ক্রয় বিক্রয়ের আলোচনায় বিভোর এলাকাবসী। যদিও চোরাই মালামাল ক্রয় বিক্রয় নিয়ে পরিস্কার করে কিছু বলেননি মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেছেন, আমার অবর্তমানে ম্যানেজার চোরাই মোটর সাইকেলের যন্ত্রাংশ গুলো কিনেছে। তবে আমরা কোন প্রকার চোরাই মাল ক্রয় বিক্রয় করিনা।
রেলওয়ের চোরাই লোহা তাদের নিকট থেকে কেমন করে উদ্ধার হল জানতে চাইলে মনিরুল কোন উত্তর না দিয়ে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ভাংড়ি ব্যবসায়ী সাইনবোর্ডের আড়ালে চলছে চোরাই লোহা ব্যবসা
ঈশ্বরদী থানার এস আই ইকবাল বলেন, মনিরুল আয়রন স্টোর থেকে পাবনা সদর থানার অভিযোগ মুলে একটি হারানো মোটর সাইকেল খোলা ( যন্ত্রাংশ আকারে) অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সে সময় মোটর সাইকেলটি চুরির অভিযোগে মো. রুহুল ইসলাম (১৮) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। আটক রুহুল ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের তিলোকপুর এলাকার মো. ওমর আলীর ছেলে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মনিরুল আয়রন স্টোরের এক প্রতিবেশী বলেন, স্যান্ডেলের ফিতা বানিয়ে বিক্রি করতেন মনিরুল আয়রন স্টোরের স্বপ্নদ্রষ্টা মো. রব্বেল। সেই ব্যবসা ছেড়ে ২০০২ সালে ছোট্ট পরিসরে একটি গাড়িঘর দিয়ে আয়রনের (ভাংড়ি) ব্যবসা শুরু করেন রব্বেল। পিতার প্রতিষ্ঠিত নিশঃপ্রান ব্যবসা রাতারাতি যেন প্রাণ ফিরে পায় মনিরুল, আমিরুল এবং আনারুলদের হস্তক্ষেপে। তিন ভাইয়ের বিচক্ষনতায় দিবারাত্রি চব্বিশ ঘন্টায় চলতে থাকে লোহার ক্রয় বিক্রয়। যদিও তাদের ক্রয়কৃত লোহা নিয়ে এলাকায় বিতর্কের শেষ নেই। এভাবে কয়েক বছরের মাথায় কোটিপতি বনে গেছেন মনিরুল আয়রন স্টোরের মালিকগন।
মনিরুল আয়রন স্টোরের এক কর্মচারী বলেন, মোটর সাইকেলটি কেনা হয় ৪ হাজার তিনশত চৌষাট্টি টাকার বিনিময়ে। যদিও আমরা আসল নকল বুঝি না আমারে এখানে আনলেই আমরা সেটা কিনে নেই। চুরি দেখার সময় আমাদের নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বহরপুরের এক ব্যবসায়ী বলেন, পিতা আর পুত্রের অবৈধ রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য এরা লাঠিয়াল বাহিনী পোষেন। সেই বাহীনির সদস্যদের কাজই হল সকল প্রকার পরিস্থিতিকে সামাল দেয়া।
সেই ভয়েই অনেকেই তাদের বাড়িতে হারানো কলের মাথা বা অন্যান্য লোহা এখানে দেখতে পেয়েও ফেরৎ নেয়ার কোন পরিবেশ না পেয়ে চায়ের দোকানে বসে আক্ষেপ করে শূন্য হাতেই বাড়িতে ফিরে যান। তবে মাসের বিশেষ তারিখে নিয়মিত ভাবেই পুলিশের কিছু সদস্যদের আনাগোনা এখানে দেখা যায় বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, মনিরুল আয়রন স্টোরের স্বপ্নদ্রষ্টা মো. রব্বেলের বিরুদ্ধে মাদকের রমরমা ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে এলাকায়। শুধু তাই নয় ইতোমধ্যেই একাধিক বার মাদক মামলায় হাজতবাসও করেছেন এই বিতর্কিত ভাংড়ি ব্যবসায়ী।