
ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশির মধ্যে একজনের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। ইতোমধ্যে মো. ইমরান হাওলাদার নামের ওই ব্যক্তির মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইউরোপে অভিবাসনের প্রত্যাশায় ইতালি যাওয়ার পথে মারা যান ইমরান হাওলাদার।
বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইতালির রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বার্তায় এ তথ্য জানায়।
বলা হয়, গত ২৫ জানুয়ারি ভূমধ্যসাগরে অতিরিক্ত ঠান্ডায় মারা যাওয়া ইতালিতে অভিবাসন প্রত্যাশী সাত জনের মধ্যে মো. ইমরান হাওলাদারের মরদেহ শুক্রবার বাংলাদেশে পৌঁছেছে। ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বিমান বন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক মরদেহ গ্রহণ করে। এরপর বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার ইমরান হাওলাদার মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
গত ২৯ জানুয়ারি ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত করে দূতাবাস। মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচ জনের বাড়ি মাদারীপুরে। বাকি দুজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জে।
মৃতরা হলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পিয়ারপুর গ্রামের ইমরান হোসেন, পিয়ারপুর গ্রামের রতন জয় তালুকদার, ঘটকচর গ্রামের সাফায়েত, মোস্তফাপুর গ্রামের জহিরুল, মাদারীপুর সদর উপজেলার বাপ্পী, কিশোরগঞ্জে ভৈরব উপজেলার সাইফুল ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মামুদপুর গ্রামের সাজ্জাদ।
২৫ জানুয়ারি ইতালির প্রসিকিউটর লুইগি প্যাট্রোনাজ্জিও এক বিবৃতিতে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ইতালির ল্যাম্পেদুসা যাওয়ার পথে নৌকায় ঠান্ডায় সাত বাংলাদেশি অভিবাসী মারা যাওয়ার তথ্য জানান।
লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ইতালির দূরত্ব প্রায় ৪২০ মাইল বা ৭৭৭ কিলোমিটার। ভয়ংকর এ জলপথ পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের ইতালি পৌঁছাতে সমুদ্র পথে নৌকাডুবিতে ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ মানুষের প্রাণ গেছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও রয়েছে। সবশেষ গত ২৫ জানুয়ারি আরও ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।
২০২১ সালে লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। সব বাধা অতিক্রম করে, প্রায় ৬০ হাজার অভিবাসী ইতালি পৌঁছাতে সক্ষম হয়। যার মধ্যে সাত হাজার ৩০০ বাংলাদেশি। আর সাগরে ডুবে মারা যান এক হাজার ৪০০ জন। বাকিরা কোস্টগার্ড ও নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে লিবিয়া ও তিউনিসিয়ায় ফিরত যেতে বাধ্য হন।