নারী ও শিশুসাত রঙ

মানিকছড়ির টিংকু বড়ুয়া জয়িতা নির্বাচিত

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

মানিকছড়ির টিংকু বড়ুয়া জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। বেগম রোকেয়া দিবস আজ (৯ ডিসেম্বর)। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর এদিন সারাদেশে সরকারিভাবে রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা নির্বাচন করা হয়েছে। এমনি একজন

পাহাড় আর অরন্য ঘেরা খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার ঐতিহাসিক মংরাজ বাড়ীঘেষা মানিকছড়ি সদরে বসবাস।

৩ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে ২য় টিংকু বড়ুয়া। মা- বাবা এস এসসি, এইচএসসি পর বিয়ে দেন পাশের জেলা চট্টগ্রাম রাউজানে।

সংসার জীবনে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন টিংকু বড়ুয়া। সংসার জীবনে বেশ কিছুদিন আনন্দে উল্লাশে সংসার চললেও এরপর নেমে আসে নির্যাতনের বিভীষিকা। শুরু হয় যৌতুকদাবী, মানসিক,শারিরীক নির্যাতন, এইসব বিষয় সামাজিক ভাবে দফায়-দফায় পারিবারিক সামাজিক, গ্রাম্য শালিশ বৈঠক হয়।

ভালো থাকার জন্য স্বামীকে পাঠান বিদেশ। বিদেশ যাওয়ার পর স্বামী, স্ত্রী- সন্তানের কথা ভুলে দীর্ঘ ৬ বছর কোন খোজখর নিচ্ছেন না।
ভেঙে পরেনি টিংকু বড়ুয়া, হালছাড়েনি সংসারের।

শুরু করেন ঘরে বসে অনলাইন ব্যবসা । প্রতিষ্ঠানটির নাম দেন “নীলময়ী ফ্যাশন হাউস’’। শুরু হয় জীবনের নতুন পথ চলা। তার বড় মেয়ে ২০২৩ সালে এসএসসি পরিক্ষার্থী। ছোট মেয়েও লেখাপড়া করছে আর জীবন যুদ্ধে লড়ছেন টিংকু বড়ুয়া।

সন্তানদের নিয়ে একেবারে দৈন্যদশায় পড়েন তিনি। এ পরিস্থিতিতে বসে থাকেননি তিনি। নিজের কর্মদক্ষতা ও বুদ্ধি খাটিয়ে শুরু করেন অনলাই ব্যবসা। প্রাথমিক পর্যায়ে মানিকছড়ি উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস নানান যাচাই-বাছাই করে। রোকেয়া দিবসে উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচত করেন জয়ীতা।

জানতে চান নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করার লড়াই। অভাবের সংসারে ফুটফুটে চেহারার সন্তানদের লেখা পড়াসহ নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াটা যেন সমাজের কিছু মানুষের হাশি ঠাট্টার খোরাক হয়।

একদিকে সংসার অন্যদিকে মেয়েদের লেখা পড়াসহ, নিজের লেখা পড়া খরচ,ভরণ পোষন চালানো ছিল কষ্টকর। ধীরে ধীরে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করেন।

নিজের প্রেরণায় বিভীষিকাময় সব স্মৃতিকে পেছনে ফেলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নতুন করে পরিকল্পনা করেন। আবার কলেজে ভর্তি হন, সফলতার সঙ্গে স্নাতক পাস করেন টিংকু বড়ুয়া। সব বাধা ডিঙ্গিয়ে টিংকু বড়ুয়া এখন স্বনির্ভর।

উপজেলায় সমাজে কোথাও সংসার ভাংঙ্গার খবর পেলে ছুটে যান তিনি। বিচ্ছেদ হওয়া নারীর পাশে দাড়ান তিনি। অসহায়দের জন্য মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রশিক্ষনে অংশগ্রহন করিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহয্য করেন তিনি।

৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মানিকছড়ি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক উপজেলা পর্যায়ে জয়িতা নির্বাচিত হয়েজেলা পর্যায়ে নির্বাচিত হন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button