
নতুন বছরে আগের সব দুঃখ কষ্ট ভুলে নতুন করে শুরু করার প্রত্যাশা সবার। তবে চাইলেই সবাই পারে না বিগত বছরের দুঃখ ভুলে নতুন করে শুরু করতে। মোহাম্মদ শাবান ফিলিস্তিনের সাত বছর বয়সী এক বালক তাদেরই একজন।
গত বছরের শুরুতে আট বছর বয়সী মোহাম্মদ শাবান গাজায় স্কুল শ্রেণীকক্ষে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু মে মাসে একটি বিস্ফোরিত ক্ষেপণাস্ত্র তাকে অন্ধ করে দেওয়ার পর সব কিছুই বদলে যায়।
মোহাম্মেদ শাবান গত বছর তার দৃষ্টিশক্তি হারায়। দখলদার ইসরাইলের হামলায় জীবনের এক বড় সম্পদ হারিয়েছে সে। নতুন বছরের ঠিক আগে তার একটি আকুতি ছিল ‘মা, আমি যদি তোমার মুখ দেখতে পেতাম! তোমাকে যদি আমি আরেকবার দেখতে পেতাম’!
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে শাবানের মা সোমাইয়া বলেন ‘শাবান খুব খুশি ছিলো, বোনদেরকে তার নতুন জুতা দেখানোর জন্য এবং বাড়িতে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়েছিল,’।
‘হঠাৎ, একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। কি হয়েছিল মনে নেই। ধুলো, বিশৃঙ্খলা, মানুষের আর্তনাদ, রক্ত…’
২০২০ সালের মে মাসে ফিলিস্তিনের ওপর হামলা করে ইসরাইল। ১১ দিন চলে সেই যুদ্ধ। এই যুদ্ধে প্রাণ হারায় অন্তত ২৬০ জন মানুষ। এর মধ্যে ছিল ৬৭ জন শিশু। ওই হামলায় অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন, হারায় ঘর-বাড়ি।
ইসরাইলের সেই বিভীষিকার শিকার হয়েছে যারা তাদের মধ্যে থাকা অবুঝ মোহাম্মদ শাবান নতুন বছরে স্মরণ করছে কি ঘটেছিল তার জীবনের সঙ্গে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা শাবান, ফারাহ ও নাইমের মতো শিশুদের কথা তুলে ধরেছে। যারা এই যুদ্ধে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছে যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে।
শাবানের মা জানান, যেদিন সে তার দৃষ্টিশক্তি হারায় সেদিন তাকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন তিনি। তখন ইসরাইলের বিমান বাহিনী হামলা করে। এতে চোখে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয় শাবান।
উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জানা যায়, শাবান আর কখনো নিজের চোখ দিয়ে কিছু দেখতে পারবে না। দৃষ্টি শক্তি হারানো মোহাম্মেদ শাবান জানায়, তার ইচ্ছা, সে আরেকবার তার মায়ের মুখটি দেখবে!
শাবান তার ভাইবোনকে বলেছে, আমি যদি আরেকবার মায়ের মুখটা দেখতে পেতাম। তাছাড়া সে তার ভাইবোনকে জিজ্ঞেস করে, কেন সে সবকিছু অন্ধকার দেখে? কেন সে আর স্কুলে যেতে পারে না!