
শরণখোলায় বিকারগ্রস্ত পুত্রের উপর্যুপরি আঘাতে নৃশংস ভাবে খুন হয়েছে বৃদ্ধ পিতা মতিয়ার রহমান মাষ্টার (৭৮)। ঘরের দরজা বন্ধ করে মসলা বাটার নোড়া ও শিল দিয়ে আঘাতে আঘাতে বৃদ্ধ পিতার মাথা, মুখমন্ডল, হাত ও পা থেতলে দেয় পুত্র আলাউদ্দিন (৩৭)। লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে উপজেলার উত্তর রাজাপুর – জীবন দুয়ারী গ্রামে। পুলিশ ঘাতক আলাউদ্দিন কে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, ৫ পুত্র ও ৪ কন্যা সন্তানের জনক মতিয়ার রহমান মাষ্টার। পুত্রদের মধ্যে ঘাতক আলাউদ্দিন চতুর্থ। ছোট বেলা থেকেই সে বেড়ে ওঠে উগ্র মানসিকতায়। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় সামান্য লেখাপড়া করলে ও শুরু থেকেই সে অনেকটা বিকারগ্রস্ত। এর আগেও সে তার বাবা মাকে অনেকবার মারধোর করেছে বলে জানান তারা।
এক পর্যায়ে শরণখোলার সন্তান ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোস্তফা কামালের একটি ফার্মে চাকুরী নেয় সে। এ সময় তাকে সামান্য শাসানোর কারনে সে বাড়িতে ফিরে আসে। ক্ষুব্ধ আলাউদ্দিন সুযোগ বুঝে মেজর মোস্তফা কামালের বৃদ্ধা মা কে একা পেয়ে কুপিয়ে তার পা কেটে নিয়ে যায়। এর আগে একই ভাবে আলাউদ্দিন তার ভাই আবুল বাশার কে কুপিয়ে জখম করে। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর কাছে সে মূর্তিমান আতংক।
ঘাতক আলাউদ্দিনের অপর ভাই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার সময় সে তার মা কে ধাওয়া করলে সে দৌড়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে পিতা মতিয়ার রহমান মাষ্টার ঘরে ওঠার সাথে সাথে ঘরের দরজা বন্ধ করে শিল ও নোড়া দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে তার মাথা, মুখমণ্ডল, হাত ও পা থেতলে দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে।
খবর পেয়ে শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ একরাম হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এলাকাবাসীর সহায়তায় ঘাতক পুত্র আলাউদ্দিন কে গ্রেফতার করে। ওসি একরাম হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাটে পাঠানো হচ্ছে। নিহতের অপর পুত্র আবুল বাশার বাদী হয়ে এজাহার দাখিল করেছেন। তার সাথে থাকা পুলিশের এস.আই আলিম বলেন , দীর্ঘ ২২ বছরের চাকরী জীবনে পুত্রের হাতে পিতার এমন নৃশংস হত্যা আর কখনো দেখিনি। এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘাতক আলাউদ্দিনের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছেন ।