
এটিএম শামসুজ্জামান, শুভ জন্মদিন ।এটিএম শামসুজ্জামানের জন্ম দিন আজ । যিনি শরীরে আমাদের মাঝে নেই, তবে বাস করছেন মনের মণিকোঠায়।
অভিনেতা, গল্পকার, চিত্রনাট্যকার, নির্মাতা এটিএম শামসুজ্জামানের জন্ম ১৯৪১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায়।
টিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে। তার পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল । শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।
তিনি , কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন। পগোজ স্কুলে তার বন্ধু ছিলেন আরেক অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তিনি ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। তারপর জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।
স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখি শুরু তার। কবি ফেরদৌসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্কুল ম্যাগাজিনে প্রথমবার ‘অবহেলা’ নামে গল্প লিখেন।
সত্তরের দশকের শুরুতে নারায়ণ ঘোষ মিতা, খান আতাউর রহমান, কাজী জহির ও সুভাষ দত্তের সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। একই সঙ্গে চিত্রনাট্যকার হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৭৭ সালে আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমনি’ ছবিতে খলনায়ক হয়ে আসেন তিনি। এতে মোড়ল চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে চলচ্চিত্রে মন্দ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। এরপর খলনায়ক হিসেবে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, সূর্য দীঘল বাড়ী’, অশিক্ষিতসহ অনেক ছবিতে অভিনয় করেন ও পুরস্কৃত হন। একসময় অবশ্য মন্দ মানুষের চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে কৌতুক অভিনেতা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।
একাধারে তিনি টিভি, মঞ্চ ও বেতারে অভিনয় করেন। ২০০৮ সালে ‘এবাদত’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেন তিনি। এখনো অভিনয়ে সক্রিয় রয়েছেন জনপ্রিয় এই খল ও কৌতুক অভিনেতা।
তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জলছবি (১৯৭১) চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা।
এটিএম শামসুজ্জামান ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনে নিজ বাসায় মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। তার মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে সমাহিত করা হয়।