সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যার ১০ বছর আজ। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি রাজধানীর রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। তখন বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মেঘ।
সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পত্তি হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন। সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় সেটি জমা দেওয়ার তারিখ ৮৫ বার পিছিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ সময়ও মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় আক্ষেপ দুই সাংবাদিকের স্বজনসহ গোটা সাংবাদিক সমাজের। সাগরের মা সালেহার মতে কোনো প্রভাবশালী মহলের ইশারায় মামলাটি সিন্দুকবন্দি হয়ে আছে। হয়তোবা সিন্দুকের চাবি হারিয়ে গেছে।
তার মা বলেন, সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। এখনো বিচারই শুরুই করা হলোনা।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপ-পরিদর্শক । চারদিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মামলায় আটজনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, মিন্টু, কামরুল হাসান, বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদ কারাগারে।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর নয় বছর ১০ মাস গড়ালেও এখনো র্যাব প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি আদালতে। এভাবে তারিখ ৮৫ বার পেছানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি ছিল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৮৫তম তারিখ। এই তারিখেও অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি কর্মকর্তা। তাই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী সময় ধার্য করেছেন ২৩ ফেব্রুয়ারি।
অভিযোগপত্র জমা না দেওয়ায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোনো পিপি নিয়োগ দেওয়া যায়নি। আদালতে মামলাটি এখন দেখছেন জেনারেল রেকর্ড অফিসার।
মামলার বিচার কাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে চিন্তিত সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পত্তির স্বজনরা।
