কক্সবাজার ফেরার পথে মাঝ সমুদ্রে আটকে যাওয়া কর্ণফুলী জাহাজটি কক্সবাজার বিএমডব্লিউ ঘাটে এসে পৌঁছেছে। রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে কক্সবাজার পৌঁছানোর কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘাটে পৌঁছায়।
বুধবার দুপুর ২টার পর জাহাজটি সেন্টমার্টিন ছাড়ে। জাহাজে ৪০০ জনের মতো যাত্রী রয়েছে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
ঘাটে পৌঁছানোর পর ওই জাহাজের যাত্রী রাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় জাহাজে ওঠার পর কিছুদূর যাওয়ার পরই কর্তৃপক্ষ জানায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় জাহাজ আর চলবে না। পরে দীর্ঘ সময় কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের কিছুই জানায়নি।
যাত্রীদের দাবি, জাহাজটির ধারণ ক্ষমতা ৪০০ জনের হলেও এক হাজারের মতো যাত্রী বহন করে। সমুদ্রে আটকে থাকার সময় যাত্রীদের জন্য খাবার পাঠানোর ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানালেও প্রকৃতপক্ষ যাত্রীদের খাবার দেয়নি। জাহাজে ছিল না লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা। এটা নিয়ে অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাহাজের যাত্রী এক বলেন , আমি পুলিশের একজন কর্মকর্তা। পরিবার নিয়ে ভ্রমণ করতে গিয়ে আজ যে হয়রানির শিকার হয়েছি, প্রশাসনের কর্মকর্তা হয়ে আমি লজ্জিত।
এ বিষয়ে পর্যটকরা বলেন, আটকে থাকার সময় তাদের খাবার দেওয়া হয়নি। অগ্রিম টিকিট ও হোটেল বুকিং থাকায় যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে অনেক। এর দায়তো কেউ নেবেনা।
ওই জাহাজের এক কর্মকর্তা ইঞ্জিন বিকল হয়ে বন্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করায় কর্তৃপক্ষ তাকে সরিয়ে দেয়। প্রত্যেক পর্যটকের জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে এসবের কিছুই করা হয়নি । এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেন্টমার্টিন ফেরত যাত্রীরা।
সম্প্রতি জাহাজে ৪০০ জনের মতো যাত্রী নিয়ে বঙ্গোপসাগরে আটকে যাওয়ার কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পরে উদ্ধারের জন্য একটি টিম পাঠানো হয়।
ট্যুর অপারেটর সদস্য কাদের আহমদ বলেন, সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজার ফেরার সময় হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। তখন জাহাজের নাবিক আমাদের বার্তা পাঠান যে তারা মাঝ সমুদ্রে আটকে গেছেন। আমরা এ খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে দেই। আমাদের ট্যুর অপারেটর থেকে যাত্রীদের নিরাপত্তা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাহাজে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বরও জাহাজটি একইভাবে মাঝ সমুদ্রে বিকল হয়ে গিয়েছিল। এ ঘটনায় পর্যটকরা অভিযোগ জানালেও এর কোনো সুরহা হয়নি।