শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়ের জন্মদিন আজ । তাকে বলা হয় ননসেন্স কবিতার প্রবর্তক। তার আদিনিবাস কিশোরগঞ্জ জেলার কাটিয়াদি উপজেলায়। ৩০ অক্টোবর ১৮৮৭ সালে কলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ১৩৬তম জন্মদিন।
ছোটোবেলায় সুকুমার রায়ের নাম ছিল তাতা। এই নামে আট বছরেই লিখেন ছড়া। কলেজে পড়ার সময়েই ‘ননসেন্স ক্লাব’ গড়ে শুরু করেন হাসি-তামাশার গল্প-কবিতার চর্চা।
তার কবিতার বই ‘আবোল-তাবোল’, গল্প ‘হ-য-ব-র-ল’, গল্প সংকলন ‘পাগলা দাশু’ এবং নাটক ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’ বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা ‘ননসেন্স’ ধরনের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়।
কেবল ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ধ্রুপদী সাহিত্যই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর বহু বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিকদের শীর্ষে রয়েছেন।
শিশুদের বিকাশে নিরলস চেষ্টাকারী তিনি, আনন্দের সঙ্গে শেখাতে লিখেছেন মজার ছড়া, গল্প ও কবিতা। শিশু সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত। তার বাবা ছিলেন শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়। বাবার লেখা তাকে প্রথম শিশুসাহিত্যে অনুরাগী করে।
সুকুমার রায়ের জন্মদিন আজ
শিশুদের আনন্দ দিতে তিনি লিখেছেন, চলে হনহন/ ছোটে পনপন/ ঘোরে বনবন/ কাজে ঠনঠন/ বায়ু শনশন/ শীতে কনকন/ কাশি খনখন/ ফোঁড়া টনটন/ মাছি ভনভন/ থালা ঝন ঝন।
‘‘হলদে সবুজ ওরাং ওটাং/ ইট পাটকেল চিত্পটাং/ গন্ধ গোকুল হিজিবিজি/ নো অ্যাডমিশান ভেরি বিজি।’
বাবুরাম সাপুড়ে,/ কোথা যাস বাপুরে/ আয় বাবা দেখে যা,/ দুটো সাপ রেখে যা …।’
‘হলদে সবুজ ওরাং ওটাং/ ইট পাটকেল চিত্পটাং/ গন্ধ গোকুল হিজিবিজি/ নো অ্যাডমিশান ভেরি বিজি।’
১৯৮৭ সালে ছেলে প্রখ্যাত পরিচালক সত্যজিত রায় বাবা সুকুমার রায়কে নিয়ে তৈরি করেন বায়ো-ডকু।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বিএসসি (অনার্স) করার পর সুকুমার মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান। সেখানে আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৩ সালে সুকুমার কলকাতায় ফিরে আসেন।
সুকুমারের ইংল্যান্ড থেকে ফেরার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়। উপেন্দ্রকিশোর জীবিত থাকতে সুকুমার লেখার সংখ্যা কম থাকলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায় ।
মাত্র ৩৭ বছর বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ক্ষণজন্মা এই সাহিত্যিক।