
এবারের হজ প্যাকেজ অমানবিক। হজ প্যাকেজ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তারা গুনাহের ভাগি হবেন। এসব মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। হজের খরচ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আজ রিটের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে হজের প্যাকেজ কীভাবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হলো এবং হজ প্যাকেজের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ অবস্থান কী তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদকে এ তথ্য জানাতে বলেছেন আদালত। বুধবার এ রিটের পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
শুনানিতে আদালত বলেন, এবার হজের এত খরচ ধরা হয়েছে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, আমরা নিজেরা এত খরচের প্যাকেজ দেখে ভয় পেয়ে গেছি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অথর্ব মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে আদালত বলেন, হজে যাওয়ার জন্য এত খরচ নির্ধারণ করার ফলে যারা উপযুক্ত তারা হজে যেতে পারছেন না। এটা একটা অমানবিক হজ প্যাকেজ।
আদালত বিমান ভাড়া প্রসঙ্গে বলেন, কোটি কোটি টাকা লোকসানের দায় হজ যাত্রীদের ওপর চাপাতে পারে না বিমান। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় হজ ফান্ড আছে। বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার ফান্ড কম। একমাত্র বঙ্গবন্ধু এ বিষয়ে চিন্তা করেছিলেন। তারপরে এ বিষয়ে কেউ চিন্তা করেনি।
‘হজ প্যাকেজ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তারা গুনাহের ভাগি হবেন’
সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাইরে অন্য যেকোনো এয়ারলাইন্সের টিকিট ক্রয় করার সুবিধা না থাকার বিষয়ে আদালত বলেন, এখানে ব্যবসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত ১২ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে পুনরায় প্যাকেজ ঘোষণা করতে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্স ছাড়াও যেকোনো এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটে হজে যাওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। ধর্ম সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী এ বছর হজ যাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন।