
হুমায়ুন ফরিদী
খল অভিনেতা অভিনেত্রি একজন নায়ক বা নায়িকার মতই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের সব ধরণের ভাষার চলচ্চিত্রের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে নেগেটিভ চরিত্রত্রের অভিনয় শিল্পিরিা। ঢালিউডের সূচনালগ্ন থেকে বাংলা সিনেমায় খলনায়কদের খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হতো। বর্তমানে সিনেমাতে ভালমানের খল অভিনেতা অভিনেত্রি কম দেখা যায়। হুমায়ুন ফরিদ ছিলেন তাদের মধ্যে একজন নক্ষত্র।
হুমায়ুন ১৯৫২ সালের ২৯ মে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এটিএম নূরুল ইসলাম ও মা বেগম ফরিদা ইসলাম। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯৬৫ সালে বাবার চাকরির সুবাদে ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মাদারীপুর থেকেই নাট্য জগতে প্রবেশ করে।
নাট্যকার বাশার মাহমুদের শিল্পী সাথে যুক্ত হয়ে কল্যাণ মিত্রের ‘ত্রিরত্ন’ নাটকে ‘রত্ন’ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয় দর্শকদের সামনে তার অভিষেক ঘটে। টাকা আনা পাই’, দায়ী ক’, সমাপ্তি, অবিচারসহ ৬টি মঞ্চ নাটক করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবে তাকে আক্ষায়িত করা হয়। ২০১৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন তিনি।
১৯৬৮ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।এরপর তিনি গণমাধ্যমে অনেক নাটকে অভিনয় করেন। ৯০-এর দশকে হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। বাংলাদেশের নাট্য ও সিনেমা জগতে তিনি অসাধারণ ও অবিসংবাদিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত বিখ্যাত সংশপ্তক নাটকে ‘কানকাটা রমজান’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ুন ফরিদী দুবার বিয়ে করেন। প্রথম বিয়ে করেন ৮০’র দশকে। ‘দেবযানী’ নামের তার এক মেয়ে রয়েছে এ সংসারে। পরবর্তীতে অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফাকে বিয়ে করলেও ২০০৮ সালে তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে।
২০০৪ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন হুমায়ুন ফরিদী। নাট্যাঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাকে সম্মাননা প্রদান করেন। তিনি ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মারা যান।
১৯৭৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নাট্য উৎসবে তিনি অন্যতম সংগঠক ছিলেন।এ উৎসবের মাধ্যমেই তিনি নাট্যাঙ্গনে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থাতেই তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্যপদ লাভ করেন।